
প্রভাতী ডেস্ক : আদালতের সঙ্গে প্রতারণা করায় এক কোম্পানির কাছ থেকে এক কোটি টাকা জরিমানা আদায়ের বিষয়টি নজিরবিহীন উল্লেখ করে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেছেন, কেউ প্রতারণার আশ্রয় নিতে গেলেও তিনবার চিন্তা করবে।
মঙ্গলবার (৭ জুন) ‘এফএমসি ও-২ লিমিটেড’ কোম্পানির কাছ থেকে জরিমানা আদায়ের পর রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। এদিন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে কোম্পানিটির প্রতিনিধিরা এই টাকা জমা দেন।
অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, ‘এফএমসি ও-টু লিমিটেড’ ২০১৭ সালে হাইকোর্টে একটি মামলা করে। তখন ছিল ডিসেম্বর মাস। তখন নিম্ন আদালতে ছুটি ছিল। এ কারণে হাইকোর্টে মামলা করে তারা জানালো তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম সিআইবি তালিকায় আসছে। এ কারণে এটি চ্যালেঞ্জ করে নিম্ন আদালতে মামলা দায়ের করবে জানিয়ে আদালত বন্ধ থাকাকালীন নিষেধাজ্ঞা চায়।
তিনি বলেন, তখন আদালত নিষেধাজ্ঞা জারি করে তাদের মামলা করতে বলেন। এরপর ২০১৭ থেকে ২০২১ পর্যন্ত তারা কোনো মামলা করেনি, বরং নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়ে এভাবেই চালিয়ে আসছিল। এরপর যখন তারা আবারও মেয়াদ বাড়াতে আবেদন করলো তখন বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এটা দেখে বলেন, আপনারা তো মামলাই করেননি। আপনারা এতদিন কী করেছেন?
এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, এ প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে না পারায় তাদের আবেদন খারিজ করে এক কোটি টাকা জরিমানা করেন আদালত। এরপর হাইকোর্টের জরিমানার আদেশের বিরুদ্ধে তারা স্থগিত চেয়ে আপিলে আবেদন করেন। কিন্তু সেখানেও তারা সেটি শুনানি না করে ফেরত নিতে চাইলেন। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে আমাদের তথ্য জানানো হয়। তখন আমরা আদালতকে বললাম, আপনারা যদি এটা ডিসমিস করে দেন তাহলে তারা আর জরিমানার টাকাটা দেবে না। পরে আদালত প্রতিষ্ঠানটিকে টাকা জমা দিয়ে তারপর মামলা প্রত্যাহারের আবেদন করতে বলেন। পরে আজকে তারা টাকা জমা দিলে আদালত তাদের আবেদনটি নিষ্পত্তি করে দেন।
এ আদেশ দেশে যুগান্তকারী উল্লেখ করে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, দেশে প্রথমবারের মতো কোর্টের সঙ্গে প্রতারণা করে আদেশ নেওয়ায় তাদের এক কোটি টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এ আদেশ বিচারব্যবস্থায় নতুন একটি মাইলফলক। এভাবে কেউ প্রতারণার আশ্রয় নিতে গেলে কম করে হলেও তিনবার চিন্তা করবে।