নিজস্ব প্রতিবেদক: দীর্ঘ ১ বছর ১০ মাস ধরে বন্ধ রয়েছে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্যক্রম। ঠিকাদার নিয়োগে জটিলতার কারণে লাইসেন্স সরবরাহ বন্ধ থাকা এ সময়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিআরটিএ অফিসে ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন জমা পড়েছে ৯০ হাজারেরও বেশি। প্রতিমাসে ৪ হাজারের বেশি ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন জমা পড়ছে চট্টগ্রাম বিআরটিএতে। তবে বিআরটিএ জানিয়েছে, আগামী মাস (সেপ্টেম্বর) থেকে স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স পাবেন আবেদনকারীরা।
চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিআরটিএ’র সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) বেগম রায়হানা আক্তার উর্মি জানান, নতুন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্স প্রাইভেট লিমিটেড ইতিমধ্যে স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স কার্ড ছাপানোর কাজ শুরু করেছে। আশা করছি আগামী মাস থেকে আবেদনকারীরা স্মার্ট কার্ড পাবেন।
তবে আবেদনকারীদের যানবাহন চলাচলে ভোগান্তি এড়াতে বিআরটিএ থেকে একনলেজমেন্ট স্লিপ দেয়া হচ্ছে। যা সড়কে চলাচলের সময় অস্থায়ী অনুমতিপত্র হিসাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দেখানো যাবে। এই স্লিপের সাধারণ মেয়াদ দেওয়া থাকে। তবে মেয়াদ শেষ হলে নতুন করে এক বছরের জন্য মেয়াদ বাড়িয়ে দিচ্ছি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ২৯ জুলাই ভারতীয় কোম্পানি মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্স প্রাইভেট লিমিটেডের সঙ্গে পাঁচ বছরে ৪০ লাখ স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহের চুক্তি করে বিআরটিএ। মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্স প্রাইভেট লিমিটেডের বাংলাদেশী এজেন্ট লজিক ফোরাম। চুক্তি অনুসারে ২০২০ সালের ২৯ জুলাই থেকে দুই মাসের মধ্যে প্রিন্ট করা স্মার্ট লাইসেন্স কার্ড সরবরাহ করার কথা। করোনা পরিস্থিতির কারণে সেই সময় বৃদ্ধি করে সাড়ে চার মাস বাড়ানো হয়। সেই হিসেবে গত বছরের ডিসেম্বর থেকে প্রিন্ট করা স্মার্ট লাইসেন্স কার্ড সরবরাহ করার কথা মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্সের। কিন্তু সময়মতো তারা স্মার্ট কার্ড লাইসেন্স সরবরাহে ব্যর্থ হয়েছে।
বিআরটিএ সুত্রে জানা যায়, নতুন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান স্মার্ট কার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়েছে পরীক্ষামূলকভাবে। পুরনো প্রতিষ্ঠান টাইগার আইটি বাংলাদেশ লিমিটেডের সঙ্গে বিআরটিএ’র চুক্তি শেষ হয় গত জুন মাসে। গত জুলাই থেকে নতুন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্স প্রাইভেট লিমিটেড তাদের কার্যক্রম শুরু করেছে।
২০১৬ সালে স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স সরবরাহের জন্য টাইগার আইটি নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয় বিআরটিএ। ২০২১ সাল পর্যন্ত পাঁচ বছরে তাদের ১৫ লাখ কার্ড ছাপানোর চুক্তি হয়। প্রতিষ্ঠানটি ২০১৯ সালের মাঝামাঝি পর্যন্ত তিন বছরের মধ্যে সাড়ে ১৪ লাখের কাছাকাছি কার্ড ছাপিয়ে বিআরটিএকে সরবরাহ করে। চাহিদার কারণে নির্ধারিত সময়ের আগে বেশি কার্ড ছাপাতে হয় তাদের।
বিআরটিএ চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয়ের উপপরিচালক (ইঞ্জিনিয়ারিং) মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, স্মার্টকার্ড ড্রাইভিং লাইসেন্স ছাপানোর জন্য আগে থেকে টাইগার আইটির সাথে বিআরটিএর চুক্তি ছিল। ইতিমধ্যে তাদের সাথে চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। নতুন স্মার্ট কার্ড ছাপানোর জন্য ২০১৯ সালের শুরু থেকে নতুন করে ঠিকাদার (ভেন্ডর) নিয়োগে টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু করে বিআরটিএ। ঠিকাদার নিয়োগে জটিলতা এখন কেটে গেছে। গত ২৯ জুলাই পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য ভারতীয় প্রতিষ্ঠান মাদ্রাজ সিকিউরিটি প্রিন্টার্স প্রাইভেট লিমিটেডের সাথে নতুন করে চুক্তি হয়েছে। তারা কার্যক্রম শুরু করেছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক :
Copyright © 2025 বাংলার প্রভাতী. All rights reserved.