
প্রভাতী ডেস্ক : সম্প্রতি আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক উপকমিটির সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি পাওয়া হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে রাজধানীর পল্লবী থানায় আরো একটি মামলা হয়েছে। শুক্রবার (৩০ জুলাই) দিবাগত রাতে র্যাব বাদী হয়ে মামলাটি করে।
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন আইনের ৩৫, ৫৫ ও ৭৩ ধারায় মামলাটি করা হয়।
পল্লবী থানা ও র্যাব-৪ সূত্র জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে র্যাব-৪ এর একজন ইন্সপেক্টর বাদী হয়ে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।
একই দিন সন্ধ্যায় রাজধানীর গুলশান থানায় র্যাব বাদী হয়ে আরো দুটি মামলা করে। এর মধ্যে একটি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অপরটি বিশেষ ক্ষমতা আইনে।
বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় তিনটি ধারা যুক্ত করা হয়েছে। সেগুলো মধ্যে মাদক আইন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন ও বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন আইনের ধারা দেয়া হয়েছে।
শুক্রবার বিকেলে হেলেনা জাহাঙ্গীরকে র্যারের গাড়িতে করে গুলশান থানায় হস্তান্তর করা হয়। পরে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় হেলেনাকে আদালত তুলে পাঁচ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ। শুনানি শেষে আদালত তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে আটটা থেকে গুলশানে হেলেনা জাহাঙ্গীরের বাড়িতে অভিযান শুরু হয়। চার ঘণ্টার অভিযান শেষে তাকে আটক করে র্যাব সদর দফতরে নেয়া হয়। উদ্ধার করা হয় বিদেশি মদ, ক্যাসিনো সরঞ্জাম, চাকু, ওয়াকিটকিসহ বিভিন্ন অবৈধ সরঞ্জাম। এরপর রাত দেড়টা থেকে চারটা পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুর-১১ নম্বরের এ ব্লকের তিন নম্বর রোডে জয়যাত্রা টেলিভিশনের কার্যালয়ে অভিযান চালায় র্যাব। অভিযানে বিভিন্ন অবৈধ সরঞ্জাম জব্দ করা হয়।
এদিকে হেলেনা জাহাঙ্গীর আওয়ামী লীগের কেউ নন’, বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা মহানগরের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল্লাহ আবু।
তিনি বলেছেন, ‘হেলেনা জাহাঙ্গীর আদালতে নিজেকে আওয়ামী লীগের লোক বলে দাবি করেছেন। আমরা প্রতিবাদ করেছি। কারণ সে আদালতে মিথ্যাচার করেছে। আদালতে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন। কারণ তাকে আগেই দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
শুক্রবার (৩০ জুলাই) রাত সাড়ে আটটার দিকে মামলার শুনানি শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
আব্দুল্লাহ আবু বলেন, ‘হেলেনা জাহাঙ্গীর ফেসবুকে সরকার ও মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করেছে। তাই তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হয়েছে। মামলায় তদন্তের জন্য তার পাঁচ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়েছিল। তার সঙ্গে আর কে কে জড়িত রয়েছে, তা বের করার জন্য। পরে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘ফেসবুকে হেলেনা জাহাঙ্গীর যে অপপ্রচার করেছে, আদালত তা শুনেছেন।’
এর আগে মামলার শুনানিতে ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরী তার কাছে জানতে চান, ‘আপনার কিছু বলার আছে?’
জবাবে হেলেনা জাহাঙ্গীর বলেন, ‘আমি সরকারের লোক। আমি আওয়ামী লীগের লোক। আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ২৫টি দেশ ভ্রমণ করেছি। আমি কোনো অপরাধ করিনি। তার প্রমাণ নেই।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমি বহিষ্কার হইনি। আমি এখনো দলের সঙ্গে আছি।’