আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কানাডায় ক্যাথলিক গির্জার নিয়ন্ত্রণে থাকা বহু ডে-নাইট স্কুলে নাম-পরিচয়হীন অসংখ্য কবরের সন্ধান মেলার পর এসব গির্জায় হামলার ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার(২৯ জুন) বিবিসি টেলিভিশন গির্জায় অগ্নিসংযোগের ওপর সচিত্র প্রতিবেদন করে। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় আলবার্তার কয়েক শতাব্দি প্রাচীন একটি গির্জা ধ্বংস হয়ে গেছে।
গত সপ্তাহে কানাডার সাসকাচুয়ান প্রদেশে ম্যারিভাল ইন্ডিয়ান রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের পাশে অচিহ্নিত অনেকগুলো কবর পাওয়া যায়। এর কয়েক সপ্তাহ আগে দেশটির ব্রিটিশ কলম্বিয়ায় কামলুপস ইন্ডিয়ান রেসিডেনসিয়াল স্কুল নামের এক পরিত্যক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণকবরের সন্ধান মেলে। সেখানে পাওয়া যায় ২১৫ শিশুর দেহাবশেষ। এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটি ১৯৭৮ সালে বন্ধ হয়ে যায়।
কানাডার আবাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বাধ্যতামূলক বোর্ডিং স্কুল ছিল। ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে সরকার ও ধর্মবিষয়ক কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে পরিচালিত এসব স্কুলে জোর করে আদিবাসী শিশুদের এনে রাখা হতো।
১৮৬৩ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত এসব স্কুলে দেড় লাখের বেশি আদবাসী শিশুকে পরিবারের কাছ থেকে জোর করে তুলে আনা হয়। এসব শিশুকে নিজেদের ভাষায় কথা বলতে এবং নিজেদের সংস্কৃতি চর্চা করতে দেওয়া হতো না। তাদের নানাভাবে নির্যাতন করা হতো।
এ ব্যবস্থার কারণে অনেক আদিবাসী শিশু ঘরে না ফেরায় ২০০৮ সালে এর প্রভাব খতিয়ে দেখতে একটি কমিশন গঠন করা হয়।
২০১৫ সালে প্রকাশিত গুরুত্বপূর্ণ ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, নীতিটি ছিল ‘সাংস্কৃতিক গণহত্যা। ২০০৮ সালে কানাডার সরকার এজন্য আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চায়। এসব স্কুলে এখন পর্যন্ত ৪ হাজার ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
ক্যাথলিক গির্জার তত্ত্বাবধানে পরিচালিত এইসব স্কুলে গণকবর আবিষ্কারের ঘটনায় কানাডার ভেতরে এবং বাইরেও ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক :
Copyright © 2025 বাংলার প্রভাতী. All rights reserved.