প্রভাতী ডেস্ক : ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে বিয়ে করে আলোচনায় আসা পটুয়াখালীর কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদার বলেছেন, তিনি এই বিয়ে করে কোনো অপরাধ করেননি। বুধবার (৩০ জুন) বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
শাহিন হাওলাদার বলেন, ‘বিয়ে করে আমি কোনো অপরাধ করিনি। যখন আমার স্ত্রী আমার সঙ্গে সংসার করতে চায়নি তখন তাকে দেশের প্রচলিত আইন ও ইসলামি শরিয়া অনুযায়ী তালাক দিয়েছি। এটাও কোনো অপরাধ নয়। অথচ একটি মহল আমাকে হেয় করে আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’
এদিকে, ওই কিশোরীকে সাবালিকা দাবি করে তিনি বলেন, ‘মেয়েটি নাবালিকা নয়, তার জন্ম ২০০৩ সালের ১১ এপ্রিল, সে হিসেবে তার বয়স এখন ১৯ বছর চলছে।'
শাহিন হাওলাদার বলেন, ‘ওই তরুণীর সঙ্গে গত ১৮ মে বাউফলের নাজিরপুরের ফারুক আকনের ছেলে সোহেলের বিয়ে হয়। ২০ মে সোহেলকে তালাক দেয় তরুণী। সোহেলকে তালাক দিয়ে সে আমাকে বিয়ে করে।’
কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া এই চেয়ারম্যান বলেন, ‘গত ২৪ জুন ওই তরুণীকে রেজিস্ট্রি করে আমি বিয়ে করি। কিন্তু বিয়ের পর আমি জানতে পারি, রমজান নামে একটি ছেলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক রয়েছে এবং এ বিয়ের কথা শুনে রমজান ঘুমের ওষুধ খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এতে আমি বিব্রত হয়ে তার (কিশোরী) কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে সে স্বীকার করে। পরে এ বিষয়ে করণীয় কী জানতে চাইলে সে তার প্রেমিকের কাছে যাওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে এবং আমাকে তালাক দিতে সম্মত হয়।’
শাহিন হাওলাদার বলেন, ‘এরপর ২৫ জুন আমাকে তালাক দিয়ে সে তার প্রেমিকের কাছে চলে যায়। এ সময় তার চাচা, দাদা ও স্থানীয়রা উপস্থিত ছিলেন। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি কোনো অপরাধ করিনি। তবে একটি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে যে, আমি তাকে জোর করে বিয়ে করেছি। যা সত্য নয়।’
এ বিষয়ে প্রকৃত তথ্য তুলে ধরতে সাংবাদিকদের অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি চাই মানুষ সত্যটা জানুক। এ ব্যাপারে আর কোনো বিভ্রান্তি না ছড়ানোর জন্য আমি সবার কাছে অনুরোধ করছি। আমি সম্মান নিয়ে বাঁচতে চাই।’
এদিকে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১৪ বছর বয়সী এক কিশোরীকে বিয়ে করায় মো. শাহিন হাওলাদারকে সোমবার (২৮ জুন) রাতে সাময়িক বরখাস্ত করে স্থানীয় সরকার বিভাগ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ৬ নং কনকদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহিন হাওলাদার সালিশ করতে গিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে অপ্রাপ্ত বয়স্ক (১৪ বছর ২ মাস ১৪ দিন) কিশোরীকে বিয়ে করেন। এ ঘটনায় তিনি স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন ২০০৯ এর ৩৪ (৪) (ঘ) ধারার অপরাধ সংঘটিত করায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এছাড়া কেন তাকে চূড়ান্তভাবে অপসারণ করা হবে না তা পত্র প্রাপ্তির ১০ কার্যদিবসের মধ্যে তার জবাব সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রেরণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
সম্পাদক ও প্রকাশক :
Copyright © 2025 বাংলার প্রভাতী. All rights reserved.