শুক্রবার, ১৮ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শুক্রবার, ১৮ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ শুক্রবার, ১৮ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২২শে মহর্‌রম ১৪৪৭ হিজরি

পরীমনির ঘটনায় নাসির এবং অমি ৭ দিনের রিমান্ডে, আদালতে যা বললেন নাসিরের আইনজীবীরা

প্রভাতী ডেস্ক : চিত্রনায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলায় গ্রেফতার আবাসন ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তুহিন সিদ্দিকী অমির বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

মঙ্গলবার ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট নিভানা খায়ের জেসি শুনানি শেষে রিমান্ডের এ আদেশ দেন।

এছাড়া লিপি আক্তার (১৮), সুমি আক্তার (১৯) ও নাজমা আমিন স্নিগ্ধার (২৪) ৩ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

এর আগে এ দিন বিকাল ৩ টায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তাদের হাজির করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সুষ্ঠু তদন্তের প্রয়োজনে প্রত্যেক আসামির ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন।

সোমবার দিনগত রাত ১২টা ৫ মিনিটে ডিবির গুলশান জোনাল টিমের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মানিক কুমার সিকদার বাদী হয়ে রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে মামলাটি দায়ের করেন।

এর আগে পরীমণির দায়ের করা মামলার পরিপ্রেক্ষিতে উত্তরায় অমি’র বাসায় অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও অমিসহ তাদের ৩ রক্ষিতাকে গ্রেফতার করে ডিবি।  অভিযানে অমি’র বাসায় তল্লাশি চালিয়ে এক হাজার পিস ইয়াবা, বিদেশি মদ ও বিয়ার জব্দ করা হয়।

এদিকে চিত্রনায়িকা পরীমনিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা মামলার প্রধান আসামি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদের আইনজীবীরা বলেছেন, তাদের মক্কেল সরকারকে লাখ লাখ টাকা ট্যাক্স দেন। তার মতো সমাজের এলিট শ্রেণির লোক খাটের নিচে মদ-ইয়াবা রেখে কেনাবেচা করেন- এ কথা বিশ্বাসযোগ্য নয়।

রাজধানীর বিমানবন্দর থানায় করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলার শুনানিতে তারা এ কথা বলেন। নাসির উদ্দিন মাহমুদের পক্ষে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি আবুল বাতেন ও সাধারণ সম্পাদক খন্দকার মোহাম্মদ হয়রত আলী মঙ্গলবার রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন শুনানি করেন।

শুনানিতে আবুল বাতেন বলেন, নাসির উদ্দিনের বয়স ৬৫ বছর। এই দীর্ঘ সময়ে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলাও নেই। তার কাছ থেকে কিছু পাওয়াও যায়নি। আসলে এর পেছনের ঘটনাটিকে সামাল দিতে এসব করা হয়েছে। রিমান্ড ফরোয়ার্ডিংয়ে তিনটি মেয়ের নাম উলে­খ করা হয়েছে। কিন্তু তাদের সম্পর্কে একটি শব্দও উল্লেখ করা হয়নি। তিনি সমাজের একজন সম্মানী লোক। তিনি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। রিমান্ড বাতিল করে যে কোনো শর্তে তার জামিন মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।

খন্দকার মোহাম্মদ হয়রত আলী বলেন, ঘটনা ৮ জুনের। মামলা হয়েছে ছয় দিন পর। আর সেই মামলা থেকেই এ মামলাটি এসেছে। মামলায় মাদক উদ্ধারের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু নাসির উদ্দিন মাহমুদ ওই বাড়িতে (উত্তরা ১ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের ১৩ নম্বর বাড়ি) ছিলেন না। তাকে অন্য জায়গা থেকে গ্রেফতার করে এ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। ওই বাসা কার তা তার দেখার বিষয় নয়। পরীমনির ওই ঘটনা না ঘটলে খালি বোতল, সোডার বোতল উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হতো না।

নাসির উদ্দিনকে যে মামলায় গ্রেফতার করতে গেছে, সেই মামলায় তো তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়নি। ওই বাড়িও তার নয়। তার শরীর থেকেও কিছু পাওয়া যায়নি। বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। আসলে বিষয় কিছু না। কিছুই পাওয়া যায়নি। ২৪ ঘণ্টা আগে তাকে গ্রেফতার করেছে। জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। কিছু পাওয়া গেলে তা অবশ্যই প্রকাশ করা হতো।

তিনি আরো বলেন, নাসির একজন সম্মানিত ব্যক্তি, ব্যবসায়ী। চক্রান্তের শিকার হয়ে এখানে আসতে হয়েছে। তিনি লাখ লাখ টাকা সরকারকে ট্যাক্স দেন। আর তিনি নাকি খাটের নিচে মাদক রেখে কেনাবেচা করতে গেছেন? তিনি সমাজের এলিট পারসন এবং ভিকটিমাইজ। যেভাবে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, এতে তার মান-সম্মান ক্ষুণ্ণ হয়েছে। তিনি অসুস্থ। এ ক্ষেত্রে রিমান্ডের কোনো যৌক্তিকতা নেই।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print