Search

বৃহস্পতিবার, ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বৃহস্পতিবার, ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ বৃহস্পতিবার, ১১ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২৭শে ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৮ই রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি

চট্টগ্রামে সয়াবিন তেলের মোড়কে বিএসটিআইয়ের ভূয়া লগো ও পরিমাপে কম দেওয়ায় জরিমানা

এম.জিয়াউল হক: বিএসটিআইয়ের (বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন) অনুমোদন না থাকার পরেও লগো ব্যবহার এবং প্রতি লিটারে ২০০ মিলি হিসেবে তেল কম দেওয়ায় চট্টগ্রাম নগরের কালুরঘাট মোহরা শিল্প এলাকার সাকসেস অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের নবান্ন পাম অয়েল এবং গৃহিণী সয়াবিনের মালিক মো: আব্দুল হালিমকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে জাতীয় ভোক্তা অ‌ধিকার সংরক্ষণ অ‌ধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বিভাগ। বৃহস্পতিবার (১৯শে নভেম্বর) দুপুর ১২টায় এই অভিযান পরিচালিত হয়।

গৃহিণী এবং নবান্ন ব্র্যান্ডের তেল

অভিযান শেষে জাতীয় ভোক্তা অ‌ধিকার সংরক্ষণ অ‌ধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যাল‌য়ের সহ: পরিচালক মো: হাসানুজ্জামান বলেন এক ব্যক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে নগরের কালুরঘাট মোহরা শিল্প এলাকার সাকসেস অয়েল ইন্ডাস্ট্রিজ নামের একটি কারখানায় অভিযানে বিভিন্ন অনিয়মের কারণে কারখানা মালিক মো: আব্দুল হালিমকে ৭০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়ার পাশাপাশি ভবিষ্যতে ওজনে কম দেওয়া এবং বিএসটিআইয়ের ভূয়া লগো ব্যবহার না করতে সতর্ক করা হয়েছে। এছাড়া সমস্ত খালি বোতল এবং বিপুল পরিমাণ স্টীকার ধ্বংস করা হয়।

অভিযানে বোতলের ওজন পরিমাপ করা হচ্ছে

তিনি বলেন, কারখানাটি অনুমোদন না থাকার পরেও
নবান্ন পাম অয়েল এবং গৃহিণী সয়াবিন নামে ২টি ব্র্যান্ডের ভোজ্য তেল বোতলে করে বাজারজাত করে আসছে। প্লাস্টিক বোতল ৪০০ মি.লি’র হলেও মোড়কে লেখা ৫০০ মি.লি, একইভাবে ৮০০ মিলির মোড়কে ১ লিটার । এমনকি প্রত্যেক প্রকারের বোতলেই দেখা যায় গায়ে লেখা পরিমাণের চেয়ে লিটার প্রতি ২০০ মি.লি তেল কম, যা এক ধরনের প্রতারণা। এছাড়া বিএসটিআইয়ের অনুমোদন নেই, উপযুক্ত ল্যাব-কেমিস্ট নেই, ল্যাবের কেমিক্যাল মেয়াদোত্তীর্ণ, নবান্ন নামের মোড়ক হুবহু রুপচাঁদা সয়াবিন তেলের নকল, মোড়কের গায়ে ভিটামিন এ সমৃদ্ধ লেখা হলেও পরীক্ষিত নয় এরকম অনেক অনিয়ম পরিলক্ষিত হয় অভিযানে।

প্রতিষ্ঠানের মালিক মো: আব্দুল হালিম বলেন, বিএসটিআই অনুমোদন নিতে গেলে তাদের অনেক শর্ত পূরণ করতে হয়, মোটা অংকের ঘুষ দিতে হয়। আমার নগদ টাকা না থাকায় আমি অনুমোদন নিতে পারতেছি না। এই প্রতিষ্ঠানের অনেক দেনা রয়েছে, আমি ব্যাংক থেকে একটি বড় অংকের ঋণ নেওয়ার চেষ্টা করতেছি। ঋণ পেলে সবকিছু ঠিক করতে পারবো। ওজনে কম দেওয়ার প্রশ্নে তিনি বলেন, বাজারের প্রতিযোগিতায় ঠিকে থাকতে বাধ্য হয়ে আমার এই অপরাধ, যার জন্য আমি লজ্জিত।

প্রতিষ্ঠানের মালিক মো: আব্দুল হালিম এবং মালিকের বন্ধু জাহেদ

মালিকের বন্ধু পরিচয়ে জাহেদ নামের এক ব্যক্তি নিজেকে ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব এবং টি.কে গ্রুপের মালিকের ভাগিনা দাবি করে বলেন, একটি প্রতিষ্ঠান কিভাবে দাঁড় করাতে হবে আমাদের ভালো জানা আছে। বৈধ, অবৈধ যাই হোক একটি শিল্প প্রতিষ্ঠানকে উপরে উঠার জন্য সুযোগ দেওয়া উচিত। তিনি বলেন, স্থানীয় থানা পুলিশসহ বিভিন্ন মাধ্যমে মাস শেষে মোটা অংকের ঘুষ দিতে হয় তাই আমরা ভালো যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা করতে অক্ষম। সাংবাদিক নেতাদের সাথে সখ্যতা আছে তাই সাংবাদিকদের টাকা-পয়সা দিতে হয়না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

অভিযান টিমে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অ‌ধিকার সংরক্ষণ অ‌ধিদপ্তর, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যাল‌য়ের উপ-পরিচালক মো: ফয়েজ উল্ল্যাহ, সহ: পরিচালক মো: হাসানুজ্জামান এবং সহ: পরিচালক পাপিয়া সুলতানা লিজা। অভিযানে সহযোগিতা করেন এপিবিএন-৯ চট্টগ্রামের একটি টিম।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সাল থেকে এভাবে অবৈধভাবে তেল বাজারজাত করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি। একই অপরাধের জন্য গত ৯ই আগষ্ট কারখানা মালিককে ২ লাখ টাকা অর্থদণ্ড ও কারখানা সিলগালা করে দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. উমর ফারুক।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print