Search

শনিবার, ৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শনিবার, ৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ শনিবার, ৬ই সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ২২শে ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ১৩ই রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি

অনুষ্ঠানে খাঁচার পাখিকে বনের পাখি ভেবে ছেড়ে দেবেন না

প্রভাতী ডেস্ক : গত এক দশকে দেশে বিদেশি পোষা পাখির ব্যাপক বিকাশ হয়েছে। শখের বশে প্রচুর মানুষ পাখি পালন করছেন। আবার পাখি পালন অনেকের আয়ের উৎসও বটে। এছাড়া এটা অবসরের ভালো সঙ্গী।

বিদেশি পোষা পাখির মধ্যে রয়েছে বাজরিগার, লাভবার্ড, ফিঞ্চ, ডাভ, ককাটেইল ইত্যাদি। এরা এক সময় বনেই বাস করত। কিন্তু পরে এদেরকে ধাপে ধাপে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে খাঁচায় নিয়ে আসা হয়। হয়তো প্রকৃতিতে এরা হারিয়ে যেতে বসেছিল।

এরা খাঁচায় ডিম পড়ে, বাচ্চাও করে। মুক্ত পরিবেশ এদের জন্য নয়। মুক্তস্থানে ছেড়ে দিলে এরা বাঁচে না। কাকসহ বনের অন্য পাখির আক্রমণের শিকারে পরিণত হয়। নিজেরদের টিকিয়ে রাখতে পারে না। সেই সক্ষমতা তাদের নেই।

দুঃখের বিষয়, ইদানীং বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি অনুষ্ঠানে এসব খাঁচার পাখি ছেড়ে দেয়া হয়, যা এক অর্থে এই নিরীহ প্রাণিগুলো হত্যা করার নামান্তর। খাঁচার পাখি খাঁচায় শোভা পায়। খাঁচায় থেকেই মানুষকে আনন্দ দেয়। বিশ্বে কোটি কোটি মানুষ খাঁচায় পাখি পালন করে। কোটি টাকার পাখি কেনাবেচা হয় বাংলাদেশে। অনেক বেকার খাঁচায় পাখি পালন করে কর্মসংস্থানের পথ বেছে নিয়েছে।

দেশের বাইরেও পোষা পাখির বড় বাজার রয়েছে। সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা, মন্ত্রী -এমপি, রাজনৈতিক নেতা, মেয়র- এমন মানুষজন যখন খাঁচার পাখি ছেড়ে দেন। খাঁচার পাখি ছেড়ে কর্মসূচি পালন করেন, তখন সত্যি মন খারাপ হয়। এমন কী নাটক-সিনেমার একদল অজ্ঞলোক খাঁচার পাখি ছেড়ে দেন। পাখিকে ‘মুক্তির স্বাদ’ দেয়ার নামে সেগুলোকে তারা হত্যা করেন। কোনটা খাঁচার, কোনটা বনের পাখি- এটুকু জানা কঠিন নয়। শান্তির পায়রা কবুতর ছেড়ে অনুষ্ঠান করা যায়। বিদেশি খাঁচার পাখি নয়।

সরকারের মন্ত্রী-এমপিসহ রাজধানীতে অনেক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা খাঁচায় পাখি পালন করেন। খাঁচায় বিদেশি পাখি পালন আমাদের দেশের আইনে বৈধ। ধর্মীয়ভাবে চিন্তা করলেও নাজায়েজ নয়। মোট কথা, খাঁচায় বিদেশি পাখি পালনের ক্ষেত্রে আইনগত ও ধর্মীয় বৈধতা আছে।

দেশের অসংখ্য ছাত্র-ছাত্রী অবসরে খাঁচায় পাখি পালনের মাধ্যমে বাড়তি অর্থ রোজগার করে। অনেক কিশোর-তরুণকে খারাপ সঙ্গ থেকে খাঁচার পাখি বাঁচায়। খাঁচার পাখির সামাজিক সুফল বহুমাত্রিক। তাই খাঁচার পাখিকে খাঁচায় রাখুন। না জেনে প্রকৃতিতে ছেড়ে দিয়ে মৃত্যুর মুখে ফেলবেন না- সবার কাছে এটি আমার একান্ত হাতজোড় অনুরোধ।

খাঁচার পাখি পালক ও পাখিবিষয়ক লেখক

মিরপুর, ঢাকা

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print