Search

শনিবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শনিবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ শনিবার, ২০শে সেপ্টেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই আশ্বিন ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৭শে রবিউল আউয়াল ১৪৪৭ হিজরি

জঙ্গল ছলিমপুরে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের আড়ালে নানা অপকর্মে জড়িত সমকামী সরোয়ার !

বিশেষ প্রতিনিধি : সকল শ্রেণী-পেশার মানুষ যার যার ধর্মের প্রতি দূর্বল এবং ধর্মগুরুর প্রতি খুবই শ্রদ্ধাশীল। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ধর্মগুরুরা তাদের অপকর্ম চালিয়ে যায় নির্দ্বিধায়। চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড থানাধীন জঙ্গল ছলিমপুর এলাকায় এরকম একজন ব্যক্তি হলেন সরোয়ার। মাদ্রাসা শিক্ষকের লেবাস ধারণ করে চালিয়ে যাচ্ছেন নানা অপকর্ম।

জানা যায়, সরোয়ারের গ্রামের বাড়ী চট্টগ্রামের বাঁশখালী থানাধীন হারুন বাজার এলাকায়। তিনি জঙ্গল ছলিমপুরে বিরাট একটা প্লট দখল করে সেখানে ‘দারুস সাফাকা আল ইসলামীয়া মাদ্রাসা’ নামে একটি দ্বীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন যাতে প্রশাসনের উচ্ছেদ কার্যক্রম থেকে বাঁচা যায়।

তার পরিচালিত মাদ্রাসায় ইবতেদায়ী বিভাগ পর্যন্ত কার্যক্রম চালু করে সেখানে অসহায় পরিবারের ছেলে-মেয়েকে বিনামূল্যে পড়ার সুযোগ দেওয়ার কথা বলে ভর্তি করিয়ে জোরপূর্বক মাসিক বেতন থেকে শুরু করে সকল প্রকার ফিঃ আদায় করেন তিনি।

এছাড়া মাদ্রাসায় ১০-১২ জন এতিম শিশু রেখে এতিমখানার নামে দেশী-বিদেশী বিভিন্ন দাতা সংস্থা থেকে লক্ষ লক্ষ টাকার ফান্ড সংগ্রহ করে সেগুলো আত্মসাৎ করেন সরোয়ার। আয় ব্যায়ের কোন প্রমাণও রাখেন না তিনি।

ছিন্নমূলের পাহাড়ের সরকারি প্লট অবৈধভাবে দখল বিক্রির অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। জানা যায়, বিভিন্ন এলাকার অসহায় ভূমিহীন মানুষকে রেজিষ্ট্রি দেওয়ার মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ৫ গন্ডার একেকটি প্লট ৪-৫ লক্ষ টাকায় বিক্রি করেন মৌলানা সরোয়ার।

সরোয়ার জামায়াতের রাজনীতির সাথেও সম্পৃক্ত বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তার মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠানে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা মিটিং এবং গোপন বৈঠক করেন নিয়মিত। পাহাড়ী এলাকা হওয়ায় এবং প্রশাসনের নজরদারি কম হওয়ার সুবাধে তারা এই এলাকাটিকে নিরাপদ স্থান হিসাবে বিবেচনা করে।

কিছুদিন পূর্বে তার মাদ্রাসায় পড়ুয়া ৭ বছর বয়সী এক শিশুকে জোরপূর্বক বলৎকার করেন তিনি। পরে ঘটনা জানাজানি হলে এলাকাবাসী থাকে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সৌপর্দ করে। কিন্তু অদৃশ্য ক্ষমতার কারণে পুলিশ তাকে আদালতে প্রেরণ না করে ছেড়ে দেয় এবং নির্যাতিত শিশুর পরিবারকে ২০ হাজার টাকা প্রদান করে ঘটনা ধামাচাপা দেয়। এছাড়া ঝাঁড়ফুক এবং তাবিজ দেওয়ার নামে যুবতী মেয়েদের সাথে বিভিন্ন অশালীন কর্মকান্ডের অভিযোগও কম নয় তার বিরুদ্ধে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন এলাকাবাসী বলেন, মৌলানা সরোয়ার খুবই দূর্নীতিবাজ একজন লোক। তিনি দাঁড়ি-টুপি নিয়ে বিরাট হুজুর সেজে নিজেকে মাদ্রাসার পরিচালক দাবি করলেও তার চরিত্র খুবই খারাপ। তার মত একজন লোকের মধ্যে সমকামীতার স্বভাব থাকা আলেম সমাজের জন্য কলঙ্কের বিষয়।

এসব অপকর্মের ব্যাপারে জানতে চাইলে সরোয়ার বলেন, ‘এই এলাকার ৯০% লোক মূর্খ। তারা বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত। আমি এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করার কারণে তারা আমাকে পছন্দ করে না বলেই আমার নামে মিথ্যা অপবাদ দেয়। আমার মাদ্রাসায় জুনায়েদ বাবুনগরীর মত আলেমও আসেন, আমার সাথে অনেক উপরের লোকজনের সাথে ঘনিষ্ঠতা। বলৎকার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ঐ ছেলেটা আমার মাদ্রাসায় পড়তো। পড়ায় অমনোযোগীতার কারণে ঐদিন তাকে একটু বেশী মারধর করায় সে বাসায় গিয়ে কান্নাকাটি করে। তখন এলাকার কিছু চাঁদাবাজ লোক আমার কাছ থেকে চাঁদা দাবি করতে এই মিথ্যা অপবাদ রটায়। ঘটনার সত্যতা ছিলো না বলে পুলিশ আমাকে ছেড়ে দেয়। ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততা না থাকলে সামাজিক বৈঠকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, এই এলাকায় আছি তাই সবাই একটা প্রস্তাব দেওয়ায় সেটা ফেলতে পারিনি।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print