শুক্রবার, ১৪ই মার্চ ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শুক্রবার, ১৪ই মার্চ ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ শুক্রবার, ১৪ই মার্চ ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১লা চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৩ই রমজান ১৪৪৬ হিজরি

চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় কিশোর প্রেমের বিরোধে লোকমান হত্যার আসামী সাইফুল বন্ধুকযুদ্ধে নিহত

বন্দুকযুদ্ধে নিহত সাইফুল

নিজস্ব প্রতিবেদক: চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় ‘কিশোর প্রেমের বিরোধে’ গোলপাহাড় এলাকার যুবলীগ নেতা লোকমান  হোসেন জনি খুনের ঘটনার প্রধান আসামি গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশের বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার ভোরে বাকলিয়া থানার কল্পলোক আবাসিক এলাকায় গোলাগুলির ওই ঘটনা ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়,   নিহত মো. সাইফুল এলাকায় যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল। তিন দিন আগে বাকলিয়া খালপাড় এলাকায় মো. লোকমান হোসেন জনিকে গুলি করে হত্যার ঘটনায় পরিবারের করা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন সাইফুল। লোকমানের মা রোকেয়া বেগম ঘটনার পরদিন রবিবার দুপুরে বাকলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাইফুলকে প্রধান করে ৮ জনকে আসামি করা হয়। মামলা দায়েরের পর ঐদিন দুপুরে কৃষ্ণ ধর (২৫) নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।

নিহত লোকমান হোসেন জনি

বাকলিয়া থানার ওসি প্রণব চৌধুরী  বলেন, বন্দুকযুদ্ধে নিহত সবুজবাগ আবাসিক এলাকার রফিক আহাম্মদের ছেলে সাইফুল এবং একই এলাকার ওই মামলার এজাহারভুক্ত আরেক আসামি কামাল উদ্দীনের ছেলে জিয়া উদ্দিন বাবলুকে সোমবার ফটিকছড়ি জাফর নগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে সাইফুল ঘটনার দিন গুলি ছোড়ার কথা এবং তার গুলিতেই লোকমানের নিহত হওয়ার কথা স্বীকার করে। এক পর্যায়ে সে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত পিস্তলটি কোথায় আছে তা জানায়। এরপর বাকলিয়া থানা পুলিশের একটি দল ওই অস্ত্র উদ্ধারে সাইফুলকে নিয়ে কল্পলোক আবাসিক এলাকায় অভিযানে যায় । কল্পলোক আবাসিক এলাকার ৫ নম্বর ব্রীজের কাছে খালপাড়ে কবরস্থানের পাশে গেলে সাইফুলকে ছাড়িয়ে নিতে তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি করে। পুলিশও তখন পাল্টা গুলি চালায়। কিছুক্ষণ গোলাগুলির পর সন্ত্রাসীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থলে সাইফুলকে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। গোলাগুলিতে বাকলিয়া থানার এসআই কারিমুজ্জামান ও এএসআই আলমগীর আহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ সাইফুলকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে বলে জানান ওসি।

উল্লেখ্য,  গত ৬ এপ্রিল শনিবার গভীর রাতে ওই খালপাড় এলাকাতেই গুলিতে নিহত হন ৩৫ বছর বয়সী যুবলীগ নেতা লোকমান হোসেন জনি, যিনি নগরীর বাদশা মিয়া রোডের পশুশালায় একটি কুলিং কর্ণার পরিচালনা করতেন। জানা যায়, বাকলিয়া থানার আওতাধীন খালপাড় ফুলতলা এলাকার কিশোর অনিকের সঙ্গে স্থানীয় এক কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্পর্ক চলার ১ বছর পর গোলপাহাড় এলাকার কিশোর শ্রাবণের সঙ্গে ওই কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এ কারণে মেয়েটি অনিককে এড়িয়ে চলা শুরু করলে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে অনিক। শনিবার রাতে শ্রাবণের বন্ধু জয় গোলপাহাড় থেকে ফুলতলা এলাকায় গেলে অনিক ও তার বন্ধুরা তাকে আটকে রেখে মারধর করে। এর মধ্যে জয় তার এলাকার ‘বড় ভাই’ লোকমানকে ফোন করে। তখন রাত প্রায় সাড়ে ১১টা। এলাকার ছোট ভাই জয়ের ফোন পেয়ে ঘটনার বিষয়ে জানতে লোকমানসহ ৩টি মোটরসাইকেলে করে ৬জন খালপাড় ফুলতলা এলাকায় যায়। সেখানে জয়কে আটকে রাখা অনিকদের সাথে কথা বলেন তারা। কিন্তু একপর্যায়ে অনীকদের সঙ্গে ঝগড়া এবং ক্রমান্বয়ে মারামারির উপক্রম হয়। তখন অনীকদের কথিত বড় ভাই সাইফুল তার ৪তলা বাড়ীর দোতলা থেকে ৭-৮ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। ঘটনাস্থলে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে লোকমানের মৃত্যু হয়।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print