Search

সোমবার, ১৫ই ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সোমবার, ১৫ই ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ সোমবার, ১৫ই ডিসেম্বর ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩০শে অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২৩শে জমাদিউস সানি ১৪৪৭ হিজরি

রাষ্ট্রদূত হিসেবে আমার নিয়োগে তিনি সত্যিকারের আনন্দিত হয়েছিলেন

জীবনের গতিপথ বদলে দেওয়া এক অনুপ্রেরণার নাম খালেদা জিয়া: মুশফিক

এমন এক দেশে আছি, যেখানে ইচ্ছে করলেই দৌড়ে যেতে পারছি না

সং অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার মেয়াদকালে দায়িত্ব পালনে ব্যক্তিগত ঋণের কথা উল্লেখ করে ফেসবুকে এক আবেগঘন স্ট্যাটাস দিয়েছেন মেক্সিকোয় নিযুক্ত সিনিয়র সচিব মর্যাদায় বাংলাদেশি রাষ্ট্রদূত মুশফিকুল ফজল আনসারী।

পোস্টে তিনি লিখেছেন, খালেদা জিয়া শুধু একজন নেত্রীই নন বরং তার জীবনের গতিপথ বদলে দেওয়া এক অনুপ্রেরণার নাম।

শনিবার (২৯ নভেম্বর) নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে অতীতের স্মৃতিচারণ করেন রাষ্ট্রদূত মুশফিক।

তিনি বলেন, মাত্র ২৬ বছর বয়সে দেশের সর্বোচ্চ অফিস—প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কাজে যোগদানের যে সুযোগ পেয়েছিলাম। যার জন্য আমি কাজ করেছি তিনি সে সময়ের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া। তিনি শুধু একজন নেতা ছিলেন না—আমার জীবনের গতিপথ বদলে দেওয়া এক প্রেরণা। তার সান্নিধ্য, মাতৃস্নেহ, আর তার শেখানো প্রত্যয়ই আমাকে আজকের অবস্থানে নিয়ে এসেছে।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে সাহস ও অনুপ্রেরণার উৎস উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মুশফিক আরও বলেন, জীবনের প্রতিটি ধাপে জুলুমের মুখে, মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের প্রশ্নে যখনই দাঁড়িয়েছি—জাতিসংঘে, হোয়াইট হাউসে বা অন্য আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে, আমি তার ভূমিকাই সগৌরবে তুলে ধরেছি। একই সঙ্গে তুলে ধরেছি বিগত হাসিনা সরকারের তার প্রতি চালানো নিপীড়ন ও নির্যাতনের চিত্র। আমার কাজের স্বীকৃতি, অনুপ্রেরণা, সাহস এবং মানুষের ভালোবাসার নীরব শক্তি, এসবের পেছনেও আছে তার আশীর্বাদ।

ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা সরকারের রোষানলের মুখে নিজের নির্বাসিত জীবনের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মুশফিক বলেন, ২০১৬ সালে পরিবারসহ লন্ডনে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আমরা একটি বাসায় সবেমাত্র উঠেছি, এই অবস্থায় ম্যাডাম লন্ডনে এলেন। তিনি শুধু বললেন, এখানে তুমি কি করবে। যুক্তরাষ্ট্রে যাও, সেখানে তুমি অনেক ভালো করছিলে। গণতন্ত্র ও মানবাধিকার নিয়ে কাজ করার সুযোগ তোমার বেশি। তোমার কানেকশনও ভালো। সেদিনই সিদ্ধান্ত নিই। পরিবারকে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসি। এরপরের ঘটনাপ্রবাহ কারও অজানা নয়। গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময় বাংলাদেশে যখনই গিয়েছি, তার সঙ্গে দেখা করেছি। গত মাসে হাসপাতালে থাকার সময় মাসুদ (ম্যাডামের ব্যক্তিগত সহকারী) তাকে জানানো মাত্রই আমাকে জানালেন—ম্যাডাম আপনাকে ডাকছেন।

সেদিনও আমরা দীর্ঘক্ষণ কথা বলেছি—দেশ, রাজনীতি, কূটনীতি নিয়ে। পরে ডা. জাহিদ ভাইও আমাদের আলোচনায় এসে যোগ দেন। কথার এক পর্যায়ে ম্যাডাম বললেন, তোমার যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার সেদিনের সিদ্ধান্ত ঠিকই ছিল। রাষ্ট্রদূত হিসেবে আমার নিয়োগে তিনি সত্যিকারের আনন্দিত হয়েছিলেন, যদিও দেশ হিসাবে মেক্সিকো হওয়ায় সম্পূর্ণ তৃপ্ত ছিলেন না।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনা করে তিনি বলেন, আজ আমি এমন এক দেশে আছি, যেখানে ইচ্ছে করলেই দৌড়ে যেতে পারছি না। সরকারি নিয়মকানুন, আর একটি ছোট্ট সার্জারির কারণে তাৎক্ষণিক ফ্লাই করতেও পারছিনা। শুধু অশ্রুসিক্ত চোখে মহান রবের কাছে অযুত প্রার্থনা— তার অফুরন্ত দয়ার ভাণ্ডার থেকে সামান্য করুণা ভিক্ষা..!

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print