
নিজস্ব প্রতিবেদক: দৈনিক আমাদের চট্টগ্রাম পত্রিকার সিনিয়র রিপোর্টার পরিচয় দানকারী ও লাভ বাংলাদেশ পার্টির চট্টগ্রাম মহানগরের উপদেষ্টা ফিরোজ চৌধুরীকে জালিয়াতি ও প্রতারণার মামলায় কারাগারে প্রেরণ করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (২৫ অক্টোবর) আদালতে আত্বসমর্পন করে জামিনের আবেদন করলে আদালত তাকে জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ফিরোজ চৌধুরী আনোয়ারা উপজেলার পীরখাইন গ্রামের মৃত জালাল আহমদের ছেলে। গত ২০১৮ সালের ২০ জুন ফিরোজ চৌধুরীর নিকট থেকে সাংবাদিক বজলুল হক ১৫,০০,০০০ (পনের লক্ষ) টাকা হওলাদ নিয়েছেন মর্মে সাংবাদিক বজলুল হকের দস্তখত জালিয়াতি করে ৩০০ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাস্পে চুক্তিপত্র সম্পাদন করেন। পরবর্তীতে জালিয়াতি চক্রের এই সদস্য ফিরোজ চৌধুরী বাদি হয়ে বজলুল হককে আসামী করে ২০২১ সালের ৭ নভেম্বর মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সি.আর. ১৮২৫/ ২২ নং মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি কোতোয়ালী থানাকে তদন্তভার দেন। কোতোয়ালী থানার এস. আই লেয়াকত মামলাটি তদন্ত করে বাদী ফিরোজ চৌধুরীর পক্ষে প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর আদালত সাংবাদিক বজলুল হকের বিরুদ্ধে সমন জারী করেন। সমন পেয়ে বজলুল হক আদালতে আত্মসর্মপন করে জামিন নিয়ে মামলার বাদী ফিরোজ চৌধুরী, সহযোগী ও প্ররোচনাকারী মিজানুর রহমান চৌধুরী এবং নুর মোহাম্মদকে আসামী করে ২০২২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারী একই আদালতে সি.আর ২৮২/ ২২ নং মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিআইডিকে তদন্তভার প্রদান করেন। সিআইডি কর্মকর্তা মোঃ আজিমুল হক দীর্ঘ তদন্ত ও বজলুল হকের দস্তখত ফরেনসিক পরীক্ষার পর ফরেনসিক পরীক্ষার ফলাফল সহ ফিরোজ চৌধুরী এবং নুর মোহাম্মদকে অভিযুক্ত করে ৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৩৪ দঃ বিঃ ধারায় গত ৩০ জুলাই আদালতে অভিযোগ পত্র দাখিল করেন। দালিলিক কোন প্রমাণ না পাওয়ায় জালিয়াতির মূল পরিকল্পনাকারী মিজানুর রহমান চৌধুরীকে অভিযুক্ত করা যায়নি বলে অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন।
আদালত তদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর ২০২২ সালের ১৬ অক্টোবর মামলার ধার্য্য তারিখে মেট্রোপলিটন ম্যাজিষ্ট্রেট (কোতোয়ালী জোন) জুয়েল দেব এর আদালত উল্লেখিত আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরোয়ানা জারী করেন।
এই বিষয়ে মামলার বাদী চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য বজলুল হক বলেন, আমি একজন নিরপরাধ ও সহজ-সরল মানুষ। সাংবাদিকতা পেশায় কলুষমুক্ত হয়ে কাজ করেছি। আমি প্রতারণার শিকার।
লাভ বাংলাদেশ পার্টির চেয়ারম্যান ও দৈনিক আমাদের বাংলা, আমাদের চট্টগ্রাম, আমাদের কক্সবাজার, ডেইলি ট্যুরিস্ট, মাসিক কক্সবাজার সৈকত’র সম্পাদক – প্রকাশক মিজানুর রহমান চৌধুরীর পত্রিকায় স্টাফ হিসেবে কর্মরত ছিলাম। তাঁর সাথে বিভিন্ন বিষয়ে ভুল বুঝাবুঝির কারণে আমি চাকরী ছেড়ে চলে আসার কারণে বিভিন্ন প্রতারক লোক দিয়ে নানা প্রকার জাল জালিয়াতির মাধ্যমে আরো কয়েকটি মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের করিয়েছেন। অন্যান্য মামলার মধ্যে আবু জাফর সাদেক সবুজ কর্তৃক দায়েরকৃত ১২/০৬/২০২২ ইং তারিখের সি.আর মামলা নং ১২৯৩/২২ অন্যতম। উক্ত মামলা চ্যালেঞ্জ করে আমি বাদী হয়ে বাদী ও মূল পরিকল্পনাকারী মিজানুর রহমান চৌধুরীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে জাল জালিয়তির অপরাধে ৪৬৮/৪৬৭/৪৭১/ ৩৪ ধারায় সি.আর ১৪৫৯/২২ নং মামলা দায়ের করি। যাহা বর্তমানে সিআইডিতে তদন্তাধীন রয়েছে। এছাড়াও মিজানুর রহমান চৌধুরীর প্ররোচনায় আবদুল জলিল বাদী হয়ে আরো একটি মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা দায়ের করেন। ২০২২ সালের ৭ জুলাই দায়েরকৃত সি.আর মামলা নং ২৬৭/২২। পরবর্তীতে আবদুল জলিল মিথ্যা মামলার বাদী হওয়ার অপরাধে নিজেই ফেঁসে যাবেন সেটা বুঝতে পেরে ভুল স্বীকার করে উক্ত মামলা প্রত্যাহার করে নেন এবং তাকে মামলা করার জন্য মিজানুর রহমান চৌধুরী ও এডভোকেট নুরুল আলম প্ররোচিত করেছে মর্মে মামলার আপোষনামায় উল্লেখ করেন।