শুক্রবার, ১৮ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শুক্রবার, ১৮ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ শুক্রবার, ১৮ই জুলাই ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ৩রা শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ, ২২শে মহর্‌রম ১৪৪৭ হিজরি

শোক দিবসে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা

প্রভাতী ডেস্ক : জাতীয় শোক দিবসে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সোমবার (১৫ই আগষ্ট) ভোরে রাজধানীর ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে বাঙালির স্বাধীনতার নায়কের প্রতি শ্রদ্ধা জানান তিনি।

ভোর সাড়ে ৬টার দিকে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে প্রবেশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এর আগেই পুরো এলাকা নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শেখ হাসিনা। পরে জাতির পিতার সম্মানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তার জ্যেষ্ঠ কন্যা।

ওই সময় বঙ্গবন্ধু ও ১৫ আগস্টের শহীদদের সম্মান জানিয়ে রাষ্ট্রীয় সালাম জানায় তিন বাহিনীর একটি চৌকস দল; বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। পরে সংক্ষিপ্ত মোনাজাতে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দলের জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে আরও একবার স্বাধীনতার মহানায়কের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

প্রধানমন্ত্রী ধানমন্ডি ৩২ নম্বর ছাড়ার পর রাস্তাঘাট ও আশপাশ এলাকা খুলে দেয়া হয় সর্বস্তরের মানুষের জন্য। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। ভিড় করেন বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠন ও শ্রেণি-পেশার মানুষ। ১৯৭৫ সালের এই দিনে একদল বিপথগামী সেনাসদস্যের হাতে স্বপরিবারে নিহত হন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার নিহত হওয়ার দিনটি শোক দিবস হিসেবে রাষ্ট্রীয়ভাবে পালন হয়ে আসছে।

১৯৭৫ সালের এই দিনে ঘাতকরা বঙ্গবন্ধুর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বাসায় আক্রমণ করে। ওই সময় বঙ্গবন্ধু ছাড়াও হত্যা করা হয় তার স্ত্রী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল, দ্বিতীয় পুত্র শেখ জামাল, কনিষ্ঠ পুত্রশিশু শেখ রাসেল, নবপরিণীতা পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজী জামাল, বঙ্গবন্ধুর একমাত্র ভাই শেখ আবু নাসেরকে।

এছাড়া বেইলি রোডে সরকারি বাসায় হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর ভগ্নিপতি আবদুর রব সেরনিয়াবাত, তার ছোট মেয়ে বেবি সেরনিয়াবাত, কনিষ্ঠ পুত্র আরিফ সেরনিয়াবাত, দৌহিত্র সুকান্ত আবদুল্লাহ বাবু, ভাইয়ের ছেলে শহীদ সেরনিয়াবাত ও আবদুল নঈম খান রিন্টুকে। আরেক বাসায় হত্যা করা হয় বঙ্গবন্ধুর ভাগনে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা শেখ ফজলুল হক মণি ও তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণিকে।

সেদিন দেশে না থাকায় বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। তারা সে সময় বিদেশে অবস্থান করছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফেরার পর দিনটিকে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করে। প্রতি বছরের মতো এবারও শোক দিবসে নানা কর্মসূচি নিয়েছে আওয়ামী লীগ। শোক দিবসের প্রত্যুষে সূর্যোদয়ের ক্ষণে ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধু ভবন ও কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ সব দলীয় কার্যালয়ে উত্তোলন করা হয় কালো পতাকা; অর্ধনমিত রাখা হয় জাতীয় পতাকা।

সকাল সাড়ে ৭টায় ঢাকার বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্টের শহীদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানান বঙ্গবন্ধুকন্যা। পাশাপাশি সেখানে অনুষ্ঠিত হয় মোনাজাত, দোয়া ও মিলাদ। দুপুর ১২টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা জানাবেন প্রধানমন্ত্রী। এ জন্য বেলা ১১টার দিকে টুঙ্গিপাড়ার উদ্দেশে হেলিকপ্টারে রওনা দেয়ার কথা রয়েছে সরকার প্রধানের।

সেখানে ফাতেহা পাঠ, মোনাজাত শেষে দুপুরে বিশেষ দোয়া মাহফিলের আয়োজনও করা হয়েছে। এদিকে জোহরের নামাজের পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সব মসজিদে হবে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত। পাশাপাশি সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান গুলোতেও হবে বিশেষ প্রার্থনা।

১৬ আগস্ট বিকেলে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে আওয়ামী লীগ। এতে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অংশ নেয়ার কথা রয়েছে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
Telegram
WhatsApp
Email
Print