
বিশেষ প্রতিনিধি : চট্টগ্রামের বাকলিয়া থানাধীন ১৯নং ওয়ার্ডের গরীব-অসহায় মানুষ এবং সাধারণ ব্যবসায়ীদের ত্রাস ও মাদক ব্যবসায়ী মো: আনিছুজ্জামান খান ওরফে ইয়াবা আনিছ আরো বেপরোয়া হয়েছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে। তার অত্যাচার ও নির্যাতন-নিপীড়নে এলাকার সাধারণ বাসিন্দারা দিশেহারা হয়ে পড়েছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, নগরীর কালামিয়া বাজারস্থ মিয়াখান নগরের ময়দার মিল সংলগ্ন আবু জাফর রোডের বাসিন্দা এয়াকুব হাজীর ছেলে কিশোর গ্যাং লিডার মো: আনিছুজ্জামান খান দীর্ঘদিন যাবত ডাকাতি, মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে জড়িত। সে এতই ভয়ংকর যে, তার এসব অপকর্মের বিরুদ্ধে কেউ মুখ খোলারও সাহস পায় না। নিজের অপকর্ম আড়াল করতে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের কতিপয় পাতিনেতাদের ছত্রছায়ায় থাকে বলে প্রশাসনকেও বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখানোর মত দুঃসাহস দেখায় আনিছ। সে চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে শার্টার ভেঙ্গে দোকানের মালামাল চুরির সাথেও সম্পৃক্ত ছিল। তার বিরুদ্ধে মাদক নিয়ন্ত্রণ আইনে বাকলিয়া থানার ২৬/০৮/২০১৯ তারিখের মামলা নং ৫৭ এবং কোতোয়ালি থানার ১৯/০৪/২০১১ তারিখের মামলা নং ৩৬ বিচারাধীন রয়েছে। এছাড়া মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম কার্যালয়েও তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে। এলাকার ভাসমান ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে রিকশা গ্যারেজ মালিক পর্যন্ত কাউকে ছাড় দেয় না সে। তার দাবীকৃত চাঁদা না পেলে মাদকসেবীদের নিয়ে চালায় চরম নির্যাতন।এলাকার বিভিন্ন শ্রেণীর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং রিকশা গ্যারেজ মালিকরা আনিছের নির্যাতন-নিপীড়ন থেকে বাঁচতে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
স্থানীয় কয়েকজন এলাকাবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আনিছের বিরুদ্ধে কিছু বলার সাহস এলাকায় কারো নেই। তার বিরুদ্ধে কিছু বলা মানে নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারা। তারা বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রক্তপাত ঘটাতেও আনিছ দ্বিধা করে না। তাই সবাই তাকে প্রচন্ড ভয় পায়, এক কথায় সে এলাকার ত্রাস। সন্ধ্যা হলে বহিরাগত সন্ত্রাসী বন্ধু -বান্ধব নিয়ে সে তার নিজ বাসায় ইয়াবা , সিসা ও গাঁজাসহ বিভিন্ন মাদকের আসর বসায়। বর্তমানে সে এতই বেপরোয়া যে পাইকারি মাদক ব্যবসার পাশাপাশি নিয়মিত চাঁদাবাজিও করে যাচ্ছে। এমনকি দরিদ্র রিকশা গ্যারেজ মালিকদের নিকট থেকেও চাঁদা দাবী করে। অসহায় লোকজন তাদের কষ্টার্জিত টাকা বাধ্য হয়ে এই চাঁদাবাজের হাতে তুলে দিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে অর্ধাহারে-অনাহারে দিন যাপন করতেছে। প্রশাসনের উচিত এই মাদক ব্যবসায়ী ও চাঁদাবাজ আনিছকে দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা। অন্যথায় যেকোনো সময় তার হাতে অসহায় লোকজনের জান-মালের অপূরণীয় ক্ষতি হতে পারে।
সরেজমিনে অনুসন্ধানের সময় আনিছকে এলাকায় না পাওয়ায় এবং মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করতে না পারায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এই ব্যাপারে বাকলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ রাশেদুল হক বলেন, আনিছের বিরুদ্ধে বাকলিয়া এবং কোতোয়ালি থানায় মাদক আইনে ২টি মামলা রয়েছে। চাঁদাবাজি এবং অন্য অপরাধ নিয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে কোন প্রকার অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে প্রচলিত আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।